”স্বাধীনতার
৪৯ তম বছরে তারুণ্যের ভাবনা “
যে
মাঠ থেকে এসেছিল স্বাধীনতার ডাক ,
সেই
মাঠে বসেছে আজ নেশার হাট
২৬শে মার্চ, মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস ,
লাখো শহিদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত হয়েছে এই স্বাধীনতা, এই
দিনে জাতি স্মরণ করে বীর শহিদদের ৷
স্বাধীনতা দিবস তাই বাংলাদেশের মানুষের কাছে মুক্তির প্রতিজ্ঞায় উদ্দীপ্ত হওয়ার
ইতিহাস ৷ ১৯৭১
সালের ২৫মার্চ
তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্তান সরকার গভীর রাতে পূর্ব পাকিস্তানের (বর্তমান বাংলাদেশ) নিরীহ জনগণের উপর হামলা চালায়। চেয়েছিল
বাঙালি জাতির স্বাধীনতার স্বপ্নকে চিরতরে স্তব্ধ করে দিতে ৷ কিন্তু পারেনি,ঢাকার বিভিন্ন স্থানে গোলাবর্ষণ করা হয়,
অনেক স্থানে নারীদের উপর পাশবিক নির্যাতন চালানো হয় এবং অনেক
স্থানে পরিকল্পিতভাবে হত্যাকান্ড চালানো হয়। এমতাবস্থায় বাঙালিদের দেয়ালে পিঠ
ঠেকে যাওয়ার অবস্থা সৃষ্টি হয় এবং অনেক স্থানেই আনুষ্ঠানিক ঘোষণার অপেক্ষা না
করেই অনেকে যুদ্ধের প্রস্তুতি নিতে শুরু করেন। পরবর্তিতে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা পাবার
পর আপামর বাঙালি জনতা পশ্চিম পাকিস্তানী হানাদারের বিরুদ্ধে যুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়ে এবং দীর্ঘ ৯ মাস রক্তক্ষয়ী
যুদ্ধের সংগ্রামে
৩০ লাখ শহিদ আর ২ লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে পূর্ব পাকিস্তান স্বাধীন করে বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটায়।
সরকার উন্নয়নের রাজনীতিতে বিশ্বাসী,আমরা উন্নয়নের রাজনীতি করি ,দেশকে উন্নয়ন করায়
আমাদের লক্ষ্য ,সর্বোপরি উন্নয়নমূলক যত প্রকার
বিশেষণ রয়েছে তার সবকটিই তারা ব্যাবহার করেছেন । দেশের উন্নয়ন করেছেন ,দেশকে উন্নতির
দিকে নিয়ে গেছেন । কিন্তু বাস্তবতা খুব কঠিন
। কল্যানমুখী রাজনীতি হয়ে পড়েছে কলুষিত । সমাজ জীবনের
রন্ধ্রে রন্ধ্রে দুর্নীতির থাবা বিস্তৃত হচ্ছে । শিক্ষা ক্ষেত্র , সমাজ জীবন সব
জায়গায় ভয়াবহ কলঙ্ক স্বাক্ষর । ছাত্রসমাজকে নিয়মহীনতার চুম্বক অবনতির অতল গহ্বরে
নিয়ে যাচ্ছে । নৈতিক মূল্যবধের অবক্ষয় হচ্ছে প্রতিনিয়ত । স্বাধীনতার ৪৯ বছরে পদার্পণ করেও যদি ভাবতে হয় , আসলেই কি আমি স্বাধীন
? আমার স্বাধীনতা রয়েছে কথা বলার , মত প্রকাশের ? প্রশ্নগুলো ঘুরপার খায় মস্তিষ্কে !!!!!
মনে হয় সময়ের সমুদ্রে আছি কিন্তু এক মূহুর্তে সময় নেই । কারণ ,স্বাধীনতার
৪৯ বছরে এসেও শিক্ষা ব্যবস্থার কোন পরিবর্তন হয়নি । কিন্তু শিক্ষা হচ্ছে এমন এক শক্তিশালী অস্ত্র যা
দিয়ে পুরো বিশ্বকে বদলে দেয়া যায় । আমার শিক্ষা ব্যবস্থা বিশ্ব বদলাতে না পারলেও আমার দেশকে
বদলে দিয়েছে , যেখানে দুর্নীতির পদ্ধতি শিখিয়েছে , ডিজিটাল কারচুপি , ভোট ডাকাতি
সহ নানা রকম অর্জন দিয়েছে । এই শিক্ষা দিয়ে কোনো জাতি আর যাই করুক উন্নতির শিখরে
পৌছাতে পারবে না ।
যোগ্য নেতৃত্বের অভাব রয়েছে,নেতা হতে হবে জনগনের নেতা কোন দলের
নেতা নয়।যারা অশিক্ষিত রাজনৈতিভাবে প্রভাবশালী তারা আজ নেতা , তারা অর্থ মোহ ছাড়া
আরা কিছুই বুঝতে চায় না ।তাই তারা নিজ স্বার্থ হাসিলে ব্যস্ত দেশের স্বার্থে নয় । নেতা
হতে হবে এমন , বিজয় উদযাপনকালে
ও সুসময়ে পেছন থেকে নেতৃত্ব দিতে হবে , অন্যদের
ভাবতে দিতে হবে যে তারাই সামনে আছে , আপনি তখনি সামনে আসবেন যখন সম্মুখে বিপদ;
তাহলে জনগন আপনার নেতৃ্ত্বকে মূল্যায়ন করবে । কিন্তু আমার
দেশের নেতারা এর উল্টো ।
সাংস্কৃতিক স্বাধীনতা ছাড়া রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক স্বাধীনতা অর্থহীন । তাই মাটি
ও মানুষকে কেন্দ্র করে গণমানুষের সুখ শান্তি ও
স্বপ্ন এবং আশা- আকাঙ্খাকে অবলম্বন করে গড়ে উঠবে বাংলার নিজস্ব সাহিত্য- সাংস্কৃতি ।বলেছিলেন শেখ মুজিবুর রহমান । কিন্তু তা কি
হয়েছে ? বরং অপসংস্কৃতি গ্রাস করেছে আমাদের সাংস্কৃতিকে , অপসংস্কৃতির কবল
আগ্রাসনে সমাজ ব্যবস্থা মূহ্যমান হয়ে পড়েছে । এই অপসংস্কৃতি থেকে পরিত্রাণের পথ
খুজতে হবে তবেই রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক স্বাধীনতা রক্ষার মাধ্যমে সমাজ ব্যবস্থা
বেগবান হবে ।
জাতির পতাকা খামচে ধরেছে আজ পুরোনো শকুন ,কারণ অপর
ব্যাক্তির কোলে পিঠে চড়ে অগ্রসর হওয়ার কোন মাহাত্ম্য নাই, কারণ চলার শক্তিলাভই যথার্থ লাভ, অগ্রসর হওয়া
মাত্র লাভ নাই । ছোটবেলায় নেহাত পরীক্ষায় পাশ
করার জন্যই বোধয় পড়েছিলাম “স্বাধীনতা অর্জনের চেয়ে স্বাধীনতা রক্ষা করা কঠিন “ ,
কিন্তু আজ কিছুটা হলেও অনুধাবন করতে পারি এর মর্মার্থ । স্বাধীন হয়েছি ঠিকই কিন্তু
পরাধীনতা এখনও পিছু ছাড়ে নি । এই পরাধীনতা নামক শিকল কেবলমাত্র তরুণরাই ছিন্ন করে
জয়ের মুকুট ছিনিয়ে আনতে পারবে ।
যেখানে
একসময় থাকে বেদনার বসবাস,
খেলাধুলা সেখানে করতে পারে আশাবাদের চাষ। তাই এতো সমস্যা , হতাশা ও অনিয়মের মাঝেও আমাদের লক্ষ্যে পৌছতে হবে ।
অজস্র রক্তের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতা যাতে করে কারো ব্যক্তিগত বা দলগত
চোরাবালিতে পথ না হারায় সেই প্রচেষ্টা আমাদের গ্রহণ করতে হবে । অন্যথায় এই
স্বাধীনতার ভাবমূর্তি ক্ষূণ্ণ হবে এবং জাতির বিপর্যয়ের অশনিসংকেতে জীবন আরও মুখ
থুবড়ে পরবে ।
তারুণ্যের শক্তি দিয়ে নতুন
রাষ্ট্রকে নব চেতনায় উদ্বুদ্ধ করে বিতাড়িত করতে হবে অশিক্ষা,কুশিক্ষা,বেকারত্ব , বুভুক্ষা ও
দারিদ্র । তাই সবাই বলি ,
কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়ি , স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়ি
এক
সাগর রক্তের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতার স্বপ্ন ছিল বিশাল;প্রত্যাশা ছিল দিগন্ত প্রসারী,তা পূরন হয়নি
আজও।সন্ত্রাস, দুর্নীতি,স্বজনপ্রীতি,
ক্ষমতার অপব্যরহারে অতিষ্ট
মানুষ , স্বাধীনতার প্রকৃত স্বাদ আজও পূরন হয়নি। স্বাধীনতা মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচারণ একটি
ইতিহাস। এই ইতিহাস পাঠ করে যুব সমাজ দেশ প্রেমে আরও উজ্জীবিত
হয়ে উঠবে এটাই হোক সবার প্রত্যাশা।